মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ, ২০১৫

বাংলা বর্ণমালার পাঠ


বাংলা বর্ণমালার পাঠ



বাংলা বর্ণমালার পাঠ



অহনলিপি-বাংলা১৪ ফন্ট ডাউনলোড লিংক:
https://sites.google.com/site/ahanlipi/font-download/AhanLipi-Bangla14.zip


সঙ্গে দেওয়া ফাইল দেখে নিতে হবে৤

অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default text font setting)
Default text font setting ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং

এবং


অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet setting)

(Default font setting ডিফল্ট ফন্ট সেটিং)

on internet(Mozilla Firefox)
(top left) Tools  
              Options--contents
              Fonts and Colors
              Default font:=AhanLipi-Bangla14
                        Advanced...
                                    Fonts for: =Bengali
                                    Proportional = Sans Serif,   Size=20
                                    Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Sans Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Monospace=AhanLipi-Bangla14,  Size=20
                                    -- OK
            Languages
            Choose your preferred Language for displaying pages
            Choose
            Languages in order of preference
            Bengali[bn]
            -- OK
 -- OK

          এবারে ইন্টারনেট খুললে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে৤ নেটে এই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে৤







বাংলা বর্ণমালার পাঠ
মনোজকুমার দ. গিরিশ 
মণীশ পার্ক, কোলকাতা 



          বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলা বর্ণমালার পাঠ কিছুটা পৃথকভাবে করা হয়৤ এই পাঠ একটি সুনির্দিষ্ট রীতিতে হলেই ভালো হয়৤ মনে পড়ছে রাশিয়ান রেডিয়োতে একজন বাংলা জানা রুশ-- বাংলা সংবাদ পড়ছিলেন, সেখানে তিনি ১৬(ষোলো) সংখ্যাটিকে একাধিকবার উচ্চারণ করেছেন শুল্ল(১৬)৤ শুনে বুঝলাম যে তিনি সম্ভবত ঢাকা থেকে বাংলা শিখেছেন৤
         
          বাঙালির মুখেও শুনেছি সংখ্যা ১(এ্যাক æk) পড়ছেন ‘এ-ক’(ek)৤ তিনি এ্যা উচ্চারণ করছেন না৤ বানানে এটি লেখা হয় ‘এক’ তাই দেখে তিনি বা সেখানকার লোক এটি এভাবেই ‘এ-ক’ ek উচ্চারণ করেন৤ বাংলায় শব্দ আছে প্রায় দেড় লক্ষ, এর প্রতিটি শব্দ ধরে ধরে উচ্চারণ শেখাই ভালো৤ তার জন্য উচ্চারণ অভিধানও আছে৤ তবে সাধারণভাবে স্কুল বা পাঠশালায় সেরকম বই, বা উচ্চারণ শেখানোর উদ্যোগ দেখা যায় না, সেখানকার অপ্রতুল পরিকাঠামো এবং পারিবেশিক দৈন্য এব্যাপারে কোনও ভূমিকাই নিতে পারে না৤
          আজকের এই আধুনিক যুগে, এই চিত্রের পরিবর্তন ঘটা দরকার এবং পরিবর্তন ঘটাতে হবে৤ তাই এব্যাপারে সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে৤ আজকাল ঘরে ঘরে টিভি, অনেকের ডিভিডি, ইন্টারনেট ইত্যাদি আছে৤ তাই যেকোনও প্রচার এসবের মাধ্যমে সহজে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে৤ এই সুযোগকে
সদ্ব্যবহার করে বাংলা বর্ণমালার সঠিক উচ্চারণ সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে৤ শব্দের ক্ষেত্রে যেমন শুল্ল(১৬) এবং এক(১ ek) বলা হয় তেমনি বর্ণমালার পাঠেও নানা ভিন্নতা দেখা যায়৤ এসব দূর করে সমতা আনা দরকার৤

          স্বরবর্ণ
          বাংলাদেশি একটি হরফ পরিচয়ের সাইটে যেমন ‘অ আ’ উচ্চারণ করা হয় “স্বরের অ, স্বরের আ” ইত্যাদি৤ তেমনি ভিন্নতা অনেক ক্ষেত্রেই আছে, বা অপ্রয়োজনীয় বিশেষণ প্রয়োগ করে বর্ণ বলার রীতি আছে৤ এতে হয়তো বুঝতে সুবিধে হয়, বা মনে রাখা সুবিধাজনক হয়, কিন্তু তা এক ধরণের বিচ্যুতি৤ এই বিচ্যুতি সারা জীবনই বহন করতে হয়৤ “স্বরের অ, স্বরের আ” বলা হচ্ছে সম্ভবত ‘অন্তঃস্থ য়’ থেকে এর পার্থক্য বোঝাতে৤ বর্ণগুলির প্রথম দুটি স্বরবর্ণ(অ,আ) এবং ‘অন্তঃস্থ য়’ ব্যঞ্জনবর্ণ, এদের ব্যবহারও আলাদা, উচ্চারণটি প্রায় একই রকম, শিশুদের সেই পার্থক্য বোঝানো যাবে না বলে এভাবে স্বরের অ, স্বরের আ বলার রীতি৤ কিন্তু এর কোনও প্রয়োজনই নেই৤ শুধু “অ আ” বললেই হবে৤বিদ্যাসাগর বলেছেন,
“প্রায় সর্বত্র দৃষ্ট হইয়া থাকে, বালকেরা অ, আ, এই দুই বর্ণস্থলে স্বরের অ, স্বরের আ, বলিয়া থাকে৤ যাহাতে তাহারা, সেরূপ না বলিয়া, কেবল অ, আ, এইরূপ বলে, তদ্রূপ উপদেশ দেওয়া আবশ্যক৤” 


          এর পরে আছে ‘ই ঈ’ এদের মধ্যে পার্থক্য বোঝাতে ‘হ্রস্ব ই, দীর্ঘ ঈ’ বলতে হবে৤ কিন্তু পরবর্তীকালে শব্দ পড়া বা শব্দ গঠনের কালে “হ্রস্ব ই” বলার দরকার নেই, কেবল “ই” বললেই হবে, শুধু যেখানে  “দীর্ঘ ঈ” ব্যবহার হবে সেখানে “দীর্ঘ ঈ” বলতে হবে৤ বাংলায় “হ্রস্ব ই”-এর ব্যবহার অনেক বেশি(ই=০.৯৪৪৯%শতাংশ, তথা ১%শতাংশ), “দীর্ঘ ঈ” খুব কমই ব্যবহৃত হয়৤ তাই বার বার ‘হ্রস্ব ই, হ্রস্ব ই’ করে বলা ক্লান্তিকর৤
         
          এর পরে আছে ‘উ ঊ’ বর্ণ দুটি৤ এদের ক্ষেত্রেও ঠিক সেই একই ব্যাপার, বর্ণমালা পড়ার সময়ে “হ্রস্ব উ  দীর্ঘ ঊ” বলতে হবে, কিন্তু শব্দ গঠন বা শব্দ পড়ার সময়ে “হ্রস্ব উ” বলার দরকার নেই, কেবল “উ” বললেই হবে, এবং যেখানে “দীর্ঘ ঊ” ব্যবহার হবে সেখানে শুধু “দীর্ঘ ঊ” বলতে হবে৤ ৤ ‘হ্রস্ব উ’-এর ব্যবহার অনেক বেশি(০.৬০৭১%শতাংশ), “দীর্ঘ ঊ” খুব কমই ব্যবহৃত হয়৤ তাই বার বার ‘হ্রস্ব উ, হ্রস্ব উ’ করে বলা ক্লান্তিকর৤

          এর পরে ‘ঋ এ ঐ ও ঔ’ নিয়ে সমস্যা নেই৤ তবে বাংলা থেকে ঌ(লি) বহুকাল আগেই বর্জিত হয়েছে, তাই এটি আর বর্ণমালায় দেখানোর দরকার নেই৤ কোনও কোনও প্রাচীনপন্থী বইয়ে ঌ(লি) এখনও দেখানো হয়, এটা বিভ্রান্তিকর৤ 

          ব্যঞ্জনবর্ণ
          জ বর্ণটিকে ‘বর্গীয় জ’ বলার দরকার নেই৤ ‘অন্তঃস্থ য’ থেকে পার্থক্য করতে এভাবে বলার রীতি৤ সেটার দরকার নেই৤ যেখানে ‘অন্তঃস্থ য’ হবে, সেখানে, সেটি ‘অন্তঃস্থ য’ বললেই চলবে৤ ‘ঝ’ বর্ণটিকে ‘হাত তোলা ঝ’ বলতে হবে না৤ স্বরবর্ণ ঋ-এর গঠনের সঙ্গে এর গঠনে অনেকটা সাদৃশ্য আছে৤

          বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণের ‘ঞ’ বর্ণটিকে কোথাও কোথাও বলা হয় ‘পিঠে বোঁচকা ঞ’৤ এভাবে বলা নিতান্ত অনাবশ্যক৤ শুধু ‘ঞ’ বললেই হবে৤ এভাবে বলার রীতি হলে খণ্ড-ৎ(খণ্ড-ত) কি তাহলে হবে ছোটো কেঁচো খণ্ড-ত!

          “ণ” বর্ণটিকে পড়া হয়, ‘মূর্ধন্য’ কিন্তু এটি কেবল ‘মূর্ধন্য’ বলে শেষ করলে হবে না, এটি পুরো “মূর্ধন্য ণ” বলতে হবে৤ মুখের ভিতরের মূর্ধা থেকে উচ্চারিত হয় বলে এটি মূর্ধন্য বর্ণ৤ মুখের কোন্‌ স্থান থেকে বর্ণটির উচ্চারণ হয় তা বলে শেষ করলে আসল বর্ণটি যে কী তা-ই অনুক্ত থেকে যায়, তাই সব সময়ে বলতে হবে-- “মূর্ধন্য ণ”৤ আরও একটি এমনি বর্ণ আছে ‘দন্ত্য ন’৤ এদুটিকে প্রাথমিকভাবে বর্ণমালা পাঠের কালে আলাদা করে “মূর্ধন্য ণ,  দন্ত্য ন” বলতে হবে৤ তবে শব্দ পাঠ বা শব্দ গঠনের সময়ে ‘দন্ত্য ন’-কে কেবল “ন” বললেই হবে, আর অন্যটির ক্ষেত্রে পুরো “মূর্ধন্য ণ” বলতে হবে৤

          “ধ” বর্ণটিকে ‘কাঁধে ভারী ধ’ বলা অন্যবশ্যক৤

          বাংলায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বর্ণ হল “র”৤ বর্ণমালা পড়ার সময়ে এটি “ব-এ শূন্য র” বলার রীতি আছে৤ এভাবে বলা অতি অনাবশ্যক৤ শুধু “র” বললেই হবে, এবং ‘ড় ঢ়’ পড়ার সময়ে ‘ড-এ শূন্য ড়, ঢ-এ শূন্য ঢ়’ বললে চলবে৤ তবে তিনটি ধ্বনি খুব স্পষ্ট করে উচ্চারণ করতে হবে, “র ড় ঢ়” এদের মধ্যে ধ্বনির লঘুত্ব বা গাঢ়ত্ব ঠিকভাবে উচ্চারণ করলে সমস্যা কমে৤ তবে অনেক সময়েই ‘র এবং ড়’ উচ্চারণ একই হয়ে যায়, আর “ঢ়” উচ্চারণ শোনাই যায় না৤ যদিও ‘র ড়’ অপেক্ষা এটির(ঢ়) পার্থক্য করা খানিকটা সহজ৤ ড় বর্ণটিকে সঠিকভাবে উচ্চারণ না করলে তা শোনাবে ‘র’৤ তখন কথককে একটু হেয় চোখে দেখা হয়, মনে করা হয় উপযুক্ত শিক্ষার অভাব আছে, বা যথেষ্ট শিক্ষিত নয়৤ অথচ কোথাও কোথাও আঞ্চলিকভাবে ড়-কে পাইকারিহারে র বলা হয়ে থাকে৤ এ ত্রুটি সংশোধন করে নেওয়া উচিত৤
পূর্ববঙ্গেই এটা দেখা যায়, যদিও সেই পূর্ববঙ্গেই কোথাও কোথাও “ড়” অতি স্পষ্ট উচ্চারিত হয়৤
          বাংলায় আছে দুটি “ব”৤ একটি বর্গীয় ব, অন্যটি অন্তঃস্থ ব৤ ‘পফবভম’ এই বর্গের ‘ব’ হল বর্গীয় ব, আর ‘যরলবশষসহ’ এই বর্ণগুলির ভীড়ে যে “ব” আছে, সেটিই হল “অন্তঃস্থ ব”(=)৤ বাংলায় দুটি ব-এর মধ্যে লিপিগত কোনও পার্থক্য নেই, এবং উচ্চারণগত কোনও পার্থক্যও নেই৤ এমনকী ব্যবহারিক কোনও পার্থক্যও নেই৤ তাই ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাথমিক শিক্ষার বর্ণ পরিচয়ের বই থেকে “অন্তঃস্থ ব” বর্জন করা হয়েছে৤ এটি বর্জন করে তাই বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণমালা হয়ছে ৩৯ বর্ণ৤

          এর পরে উল্লেখ করতে হয়, “শষস” শিস্‌ ধ্বনিগুলির৤ এই বর্ণ তিনটির প্রথমটি ‘তালব্য শ’, পরেরটি ‘মূর্ধন্য ষ’ এবং তার পরেরটি বা শেষেরটি ‘দন্ত্য স’৤ ‘মূর্ধন্য ষ’ পড়ার রীতি কোথাও কোথাও “পেটকাটা” মূর্ধন্য ষ৤ স্পষ্টতা আনার জন্য এভাবে ‘পেট কাটা’ ইত্যাদি বলার দরকার নেই৤ শুধু মূর্ধন্য ষ বললেই হবে৤ বাংলায় ষ-এর সঠিক উচ্চারণ নেই৤

          অভিধানে দেখা যায়, বাংলার এই তিনটি বর্ণের মধ্যে ‘স’ দিয়ে শুরু শব্দ সংখ্যা সব চেয়ে বেশি৤ কেবল তা-ই নয়, সকল বর্ণের মধ্যেও ‘স’ দিয়ে শুরু শব্দই সবচেয়ে বেশি৤ অথচ বাংলায় স-ধ্বনি(s) কিন্তু প্রায় শোনাই যায় না, লেখায় স-দিয়ে শব্দ শুরু করলেও বা শব্দমধ্যে ‘স’ থাকলেও তার উচ্চারণ প্রায় সর্বত্রই হয় “শ”৤ বরং স-দিয়ে(s) এর সঠিক উচ্চারণ করলে লোকের কাছে নিন্দিত হতে হয়৤ অবাক কাণ্ড! ‘শ্যাম বাজারের শশীবাবু’ কৌতুক করে বলা হয়, ‘স্যামবাজারের সসিবাবু’৤ অর্থাৎ যিনি “স”-কে স(s) বলেন, তাঁকে উলটে ঠাট্টাই করা হয়৤ তবে যুক্তবর্ণে “স”(s) উচ্চারণের দেখা পাওয়া যায় প্রচুর৤ এমনকী “শ্রী” লিখলেও তার উচ্চারণ হয়, “স্রি”৤ সুশ্রী আর সুশ্রী থাকে না, হয়ে যায়--শুস্রি!  স(s) দিয়ে উচ্চারণযুক্ত শব্দ বাংলায় প্রায় হাতে গোণা-- সেস, ব্যাস্‌, বাস(bus) ইত্যাদি ধরনের অল্প কয়েকটি মাত্র তেমন শব্দ বাংলায় চলে৤

         তাই শব্দ গঠনের কালে বা শব্দ পড়ার কালে ‘তালব্য শ’ বলার দরকার নেই, কেবল ‘শ’ বললেই হবে৤ অন্য দুটির ক্ষেত্রে “মূর্ধন্য ষ” এবং “দন্ত্য স” বললেই হবে৤ ব্যবহারিক ভাবে ‘শ’-উচ্চারণই প্রায় সব, তাই বার বার ‘তালব্য শ, তালব্য শ’ বলা ক্লান্তিকর৤

          যেখানে ‘য়’ থাকবে সেখানে তা “অন্তঃস্থ য়” বলতে হবে, কিন্তু যেখানে “অ” থাকবে বা “আ” থাকবে সেখানে ‘অ আ’ বললেই হবে, স্বরের অ, স্বরের আ বলার দরকার নেই৤

          আজকাল ইংরেজি জেড(z) ধ্বনি বোঝাতে জ-এর তলায় বিন্দু দিয়ে জ়(z) লেখার চেষ্টা হচ্ছে৤এটিতে সুবিধা যতটা, অসুবিধাও ততোটাই৤ এর দরকার কি? যদি বাংলাদেশে আজান=আযান লেখা হয়, এখানে z=য, ব্যবহার চলতে পারে৤ বাংলায় “য”-এর প্রকৃত উচ্চারণ না হয়ে অন্যরকম হয়৤ তাই এটিকে অন্য কাজে(z=য) ব্যবহার করা যেতে পারে৤ 

          “জ়” নিয়ে আলোচনা, এবং সমালোচনা অনেক হতে পারে, কিন্তু খুব বেশি পালটে দেওয়া ঠিক নয়, হঠাৎ করে তো নয়ই৤ বাংলায় আছে তলায় বিন্দু যুক্ত চারটে হরফ-- রড়ঢ়য়৤ এই তালিকার সঙ্গে আবার একটি তলায় বিন্দুযুক্ত হরফ বাড়লে লেখায় সমস্যা বাড়বে, কারণ হরফের তলায় বিন্দু দিতে হলে কলম তুলতে হয়৤ আর বাংলায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বর্ণ হল ‘র’(১০.৩৭%শতাংশ)৤ তাছাড়া, ‘ঢ়’ বাদে বাকি দুটির(ড়,য়) ব্যবহারও অনেক৤ তাই বারে বারে কলম তুলতে হলে লেখার গতি কমে যায়৤ একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে সকল লেখায় প্রতিটি পংক্তিতে তলায় বিন্দুযুক্ত হরফ একাধিক থাকে৤

          অন্যদিক থেকেও এটি আলোচনার যোগ্য৤ তা হল, ‘ইংরেজি’ z ধ্বনিকে সঠিকভাবে ধরতে যদি জ-এর তলায় বিন্দু দিয়ে “জ়” লেখা হয়, তাহলে ‘বাংলা’ ধ্বনি সঠিকভাবে ধরার জন্য সবিশেষ= শবিশেশ / শবীশ৙শ লেখা উচিত নয় কি? অন্য অনেক কিছুর প্রতি আমাদের এত মান্যতা, তা কি কেবল বাংলাকে বাদ দিয়ে? “বাংলা” কি ঘরের ব্যাপার বলে অবহেলিত হবে? সংস্কৃতের প্রতি আমাদের এত মান্যতা(সবিশেষ), ইংরেজির প্রতি মান্যতা(ক্যুইজ়), হিন্দির প্রতিও মান্যতা(গান্ধী=গাঁধী), কেবল মাতৃভাষা বলে বাংলা ধ্বনিই মান্যতা পাবে না?  
         ‘সবিশেষ’ বানানটি ১০৮ রকম করে লেখা চলে৻

          বাংলা বর্ণমালা তাহলে দাঁড়াবে এরকম --

          স্বরবর্ণ
          অ আ, হ্রস্ব-ই, দীর্ঘ-ঈ, হ্রস্ব-উ, দীর্ঘ-ঊ, ঋ এ ঐ ও ঔ =১১টি৤

          ব্যঞ্জনবর্ণ
          ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ, মূর্ধন্য-ণ, ত থ দ ধ, দন্ত্য-ন, প ফ ব ভ ম, অন্তঃস্থ-য, র ল তালব্য-শ, মূর্ধন্য-ষ, দন্ত্য-স, হ, ড-এ শূন্য ড়, ঢ-শূন্য-ঢ়, অন্তঃস্থ-য়, ৎ ং ঃ ঁ = ৩৯টি৤

          বাংলাভাষা বিশেষজ্ঞদের মুখের এই মান্য উচ্চারণ সিডিতে প্রচার হলে সকলের পক্ষে সুবিধে হবে৤ বাংলা বর্ণমালার একটা মান্য উচ্চারণ সর্বত্র প্রচলিত হবে৤ রেডিয়ো, টিভিতে এফএম-এ এভাবে উচ্চারণ করলে সঠিক হবে৤

          বর্ণগুলি শব্দে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী হবে তা দেখা যাক--

স্বরবর্ণ
অ=অচল → অ চ ল
আ=আমল→ আ ম ল
হ্রস্ব-ই=ইট → ই ট
দীর্ঘ-ঈ=ঈগল→ দীর্ঘ-ঈ গ ল
হ্রস্ব-উ=উট→ উ ট
দীর্ঘ-ঊ=ঊষর→দীর্ঘ-ঊ  মূর্ধন্য-ষ 
ঋ=ঋণ→ঋ মূর্ধন্য-ণ
এ=এণ→ এ মূর্ধন্য-ণ
ঐ=ঐশ → ঐ শ
ও=ওজন→ও জ ন
ঔ=ঔষধ→ঔ মূর্ধন্য-ষ

ব্যঞ্জনবর্ণ
ক=কত →ক ত
খ=খবর→ খ ব র
গ=গম→ গ ম
ঘ=ঘর→ ঘ র
ঙ=সঙ→ দন্ত্য স
চ=চপল→চ প ল
ছ=ছল→ ছ ল
জ=জল→ জ ল
ঝ=ঝলক→ ঝ ল ক
ঞ=মিঞা→ ম-এ হ্রস্ব ইকার ঞ-তে আকার
ট=টগর→ ট গ র
ঠ=ঠগ→ঠ গ
ড=ডহর→ ড হ র
ণ=গণন→গ মূর্ধন্য-ণ
ত=তট→ ত ট
থ=থই→ থ ই
দ=দই→ দ ই
ন=নত= ন ত
প=পবন→ প ব ন
ফ=ফল→ ফ ল
ব= বল→ ব ল
ভ=ভর→ ভ র
ম=মঠ→ ম ঠ
য=যত→ অন্তঃস্থ-য
র=রত→ র ত
ল=লয়→ ল অন্তঃস্থ-য়
শ=শত= শ ত
ষ=ষড়→মূর্ধন্য-ষ, ড-এ শূন্য ড়
স=সকল→ দন্ত্য স ক ল
হ=হত→ হ ত
ড়=ঝড়→ ঝ ড-এ শূন্য ড় [শব্দের প্রথমে কখনও ব্যবহৃত হয় না]
ঢ়=আষাঢ়→ আ মূর্ধন্য-ষ-এ আকার, ঢ-এ শূন্য ঢ় [শব্দের প্রথমে কখনও ব্যবহৃত হয় না]
য়=আয়→ আ অন্তঃস্থ-য় [শব্দের প্রথমে কখনও ব্যবহৃত হয় না]
ৎ=সৎ → দন্ত্য স, খণ্ড-ত
ং=রং → র অনুস্বর [অনুস্বা বলার দরকার নেই]
ঃ =ওঃ→ ও বিসর্গ
ঁ=ওঁর→ ও-তে চন্দ্রবিন্দু, র

          বাংলায় শব্দ নির্মাণে সরাসরি বর্ণ ব্যবহার করে যথাযথ উচ্চারণ যুক্ত শব্দ গঠন করতে পারলে সদ্য হরফ পরিচয় হওয়া শিশুরা খুব সহজে শব্দ গঠন করতে পারবে এবং বুঝতেও পারবে৤ যেমন স্বরবর্ণ শেখার পরেই সে গঠন করতে পারবে-- উ ই=উই, ও ই =ওই৤

          তেমনি ব্যঞ্জন বর্ণের ক্ষেত্রেও করতে হবে, তাতে প্রাথমিক শিক্ষা সহজ হবে৤ যেমন--
কত  গত  ঘন  তত  তব  তম  দই  থই  নই  নও  নগ  নত নব  বউ  বই  
ভজ  ভব  মই  মউ  মম ইত্যাদি৤ এগুলি স্বরান্ত শব্দ বলে উচ্চারণে এবং শব্দ গঠনে সমস্যা হবে না৤ 
স্বরান্ত এবং ব্যঞ্জনান্ত শব্দ শুরুতেই একত্রে ব্যবহার শুরু করলে সমস্যা হয়-- তত(স্বরান্ত) এবং আম(ব্যঞ্জনান্ত)৤ এদের উচ্চারণ  তত, আম্‌৤ 



        এজন্য দেখুন লিংক: http://bangla-biswa.blogspot.in/2008/11/blog-post_30.html


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন